দুই মহিলার স্বাভাব ও সম্প্রতি প্রেক্ষাপট

লিখেছেন লিখেছেন ইসহাক মাসুদ ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১২:৫৪:২৪ দুপুর



(লেখাটি লম্বা হলেও পড়বেন আশা করি মজা পাবেন)

আমার নিকট-পরিচিত দু’জন মহিলা আছেন, সম্পর্কে তারা আমার মুরুব্বি হন। একজনকে আমরা ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি অভাব অনটনে, ঝঞ্ঝাট-বিক্ষু্ব্ধ পরিবেশে সংসার করে আসছেন; অবশ্য বর্তমানে সন্তানদের বদৌলতে সুখ-নদীর কাছাকাছি। আর অন্যজন স্বামী সংসার নিয়ে সুখি দাম্পত্য জীবন নির্বাহ করে আসছেন। বাস্তবতঃ পৃথিবীতে কেউ পুরোপুরি সুখি নন যে পরিমান সুখি তা আপেক্ষিক। প্রথমজন হেনকর্ম নাই যা করেন না, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি লালন পালন, ক্ষেত-খামার, বাড়ী তথা গ্রামের লোকজনের সাথে ঝগড়া ঝাটি সব করেন। বর্তমানে যা আছে তার চাইতে বেশি দেখান অর্থাৎ হেন তেন দিছান দেখ। অন্যজন ঐ সব কাজ কারবারে নাই,কারো সাথে দেনা নাই লেনা নাই, সবার সাথে সৎ ব্যবহার তবে করেন। কখনো কারো সাথে কদাচিৎ ঝগড়া বাঁধলে তার খাইরিয়্যাত নাই। তার চৌদ্দগুষ্ঠি দেখে ছাড়েন, হ্যাঁ প্রতিপক্ষ উত্তর দিলে প্রত্যুত্তর দেন না, বরং রুমে গিয়ে টিভির ভলিউম বেড়ে দিয়ে সিরিয়াল দেখেন।

আমি চিন্তা করলাম! দু’জন মহিলার চেহারা সুরতে এক, অঙ্গপ্রতঙ্গে অভিন্ন কিন্তু নেচার ভিন্ন কেন? আমি তাদের অতীত জীবনী পড়লাম। দেখলাম, ১ম জনের পিতা ছোট বেলায় মারা গিয়েছে, ভাইয়েরা বড় করে বিয়ে দিয়েছেন। ১২/১৪ জন সদস্যের অভাবি সংসার! মহিলাটি অভাব অনটনের সাথে যুদ্ধ করে বড় হয়েছেন। অন্যজনের পিতা একজন চাকুরীজীবি সন্মানি ব্যক্তি। তার ২ ছেলে ও ৫ অনিন্দ্য সুন্দরী কন্যার পিতা। সন্মানি ব্যক্তির অনিন্দ্য সুন্দরী মেয়ে হওয়াতে সল্প বয়সে তাদেরকে বড় বড় লোক কিলবিল করে বিয়ে করে নিয়ে যায়। বুঝলাম পরিবেশ বড় কথা, পরিবেশে কাউকে তেরিয়া বানায়, কাউকে মাধুর্য্যমন্ডিত করে তুলে। পরিবেশ কাউকে ঠনঠনে রসকষহীন বানায়, কাউকে শান্তশিষ্ট বানায়। কাউকে হতাশায় চঞ্চল আউলা ঝাউলা বানায় কাউকে গুরু-গম্ভীর, গভীর বানায়।

আমাদের দেশে দুই নেত্রী দেশ চালান, কেউ অতীতে কেউ বর্তমানে। তারা মহিলা। বড় হয়েছেন ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে। কেউ বড় হয়েছে রাজনীতির মারপ্যাচের পঙ্কিল কর্দমায়, কেউ বড় হয়েছেন অনোল্লেখযোগ্য সহজ সরল পরিবারে। একজন বিয়ে করে বিজ্ঞানীর বাড়ীতে গেলেও পৈত্রিক বাড়ী ও পরিবেশে থেকে মুক্ত হতে পারেননি বাবার অসমাপ্ত রাজনীতির কাজ হাতে নেয়ার কারনে। অন্যজন বিয়ে করে সেনা বাহিনীর সুশৃঙ্খল নিরোত্তাপ বাড়ী ও পরিবেশে গিয়েছেন। যদিও রাজনীতি পঙ্কিলতার আবর্তে জড়িয়েছেন কিন্তু পৈত্রিক ও অতীত সেনানিবাসের শৃঙ্খলার প্রভাব বিদ্যমান। তাই তাকে হঠাৎ উত্তাপ হতে, হঠাৎ তেরিয়া হতে, হঠাৎ প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়নি। আমার পরিচিত ২য় মহিলার ন্যায় যদিও কথনো কারো চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করেছে কিন্তু প্রতিউত্তরের পূর্বে নিরোত্তাপ হয়েছে। পক্ষান্তরে ২য় নেত্রী অন্যের কাছে বড়াই করেছেন, উত্তপ্ত হয়েছেন, বলেছেন আমি হেনতেন, ডিগ্রী ডক্টরেটরে অধিকারীনি ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার পরিচিত ১ম মহিলার ন্যায়।

প্রিয় পাঠক! যদি সহমত হন জানাবেন,ভিন্নমত হলে যুক্তি দিবেন গালি দিবেন না। কষ্ট হয়, কারণ দরিদ্রঘরের ছেলেতো কষ্ট করে বড় হয়েছি।

বিষয়: বিবিধ

১১৫১ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

178407
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:০০
রাইয়ান লিখেছেন : ভালো লেগেছে লেখাটি, অনেক ধন্যবাদ ।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:০৮
131484
ইসহাক মাসুদ লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
178409
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:০২
মিষ্টি স্বপ্ন আরিফ লিখেছেন : হুম.... আপনার কথায় রাজাকারের গন্ধ আছে। (:
178413
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:০৭
ইসহাক মাসুদ লিখেছেন : বর্তমানে সরকারের বিপক্ষে কোন কথা লিখলেই সে রাজাকার হয়ে যায়। বিষটি খুবই দুঃখজনক। আরিফ সাহেব আপনি স্বপ্ন দেখেন মিষ্টি কিন্তু কথা বলেন,তিতা। Thinking
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:০০
131501
মিষ্টি স্বপ্ন আরিফ লিখেছেন : সরি, ভাই। আমার মনে হয় আপনি আমার কথার অর্থ ভূল করেছেন। আমি আসলে মজা করে ঐ মন্তব্য করেছি। আপনার তুলনা ঠিক আছে। কিন্তু আজকাল সত্য বলা মানেই রাজাকার যদি আমিও ঐ মার্কা রাজাকার!!!!!!!!
178426
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৩৯
বিন হারুন লিখেছেন : কথাগুলো সত্য হলেও আমি সত্য বলব না, কারন আমি জেলকে ভয় পাই, আরো ভয় পাই পুলিশ মামার অত্যাচারকে.
178445
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:০৩
শফিউর রহমান লিখেছেন : সত্য না বললেই যে আপনি নিরাপদ হয়ে গেলেন এমন ভুল ধারনায় আমাদেরকে অত্যাচারীদেরকে আরো অত্যাচার করতে উৎসাহিত করছে, করেছে এবং করবে।
জনাব বিন হারুন! বলতে পারেন সেই কলেজ ছাত্র লিমন কোন্ সত্য কথাটা বলতে গিয়েছিল অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে?
178527
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৪
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
178786
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৮:৪৩
উম্মু রাইশা লিখেছেন : মুসা(আঃ) বড় হয়েছিলেন ফেরাউনের বাসায়, ইব্রাহীমে(আঃ)এরপিতা ছিলেন মূর্তি পূজক।পরিবেশের দোহাই দিলে চলেনা আসলে
309989
২০ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:১৮
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন :
পরিবেশ কাউকে ঠনঠনে রসকষহীন বানায়, কাউকে শান্তশিষ্ট বানায়। কাউকে হতাশায় চঞ্চল আউলা ঝাউলা বানায় কাউকে গুরু-গম্ভীর, গভীর বানায়।


যথার্থ বলেছেন।

জী আপনার সাথে সহমত।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File